।। টাকার আপদ।।

বুড়ো মুচি রাতদিনই কাজ করছে আর গুনগুন গান করছে। তার মেজাজ বড় খুশি, স্বাস্থ্যও খুব ভালো। খেটে খায়; স্বচ্ছন্দে দিন চলে যায়।
🕸️তার বাড়ির ধারে এক ধনী বেনে থাকে। বিস্তর টাকা তার; মস্ত বাড়ি, অনেক চাকরবাকর। মনে কিন্তু তার সুখ নাই, স্বাস্থ্যও তার ভালো নয়। মুচির বাড়ির সামনে দিয়ে সে রোজ যাতায়াত করে আর ভাবে, ‘এ লোকটা এত গরিব হয়েও রাতদিনই আনন্দে গান করছে, আর আমার এত টাকাকড়ি, আমার একটুও আনন্দ হয় না মনে—গাওয়া তো দূরের কথা। ইচ্ছা হলে তো টাকা দিয়ে রাজ্যের বড়-বড় ওস্তাদ আনিয়ে বাড়িতে গাওয়াতে পারি—নিজেও গাইতে পারি—কিন্তু সে ইচ্ছা হয় কই?’ শেষটায় একদিন সে মনে মনে ঠিক করল যে এবার যখন মুচির বাড়ির সামনে দিয়ে যাবে তখন তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথাবার্তা বলবে।
🕸️পরদিন সকালেই সে গিয়ে মুচিকে জিজ্ঞাসা করল, “কি হে মুচিভায়া, বড় যে ফুর্তিতে গান কর, বছরে কত রোজগার কর তুমি?”
🕸️মুচি বলল, “সত্যি বলছি মশাই, সেটা আমি কখনো হিসাব করি নি। আমার কাজেরও কোনদিন অভাব হয় নি, খাওয়াপরাও বেশ চলে যাচ্ছে। কাজেই, টাকার কোন হিসাব রাখবারও দরকার হয় নি কোনদিন।”
🕸️বেনে বলল, “আচ্ছা, প্রতিদিন কত কাজ করতে পার তুমি?”
🕸️মুচি বলল, “তারও কিছু ঠিক নেই। কখনো বেশি করি, কখনো কম করি।”…