শ্রীগোবিন্দ-কথা
(সুকুমার রায়)
আমি অর্থাৎ শ্রীগোবিন্দ মানুষটি নই বাঁকা।
যা বলি তা ভেবেই বলি, কথায় নেইকো ফাঁকা
এখানকার সব সাহেবসুবো, সবাই আমায় চেনে
দেখতে চাও তো দিতে পারি সাট্টিফিকেট এনে
ভাগ্য আমায় দেয় নি বটে করতে বি. এ. পাশ
তাই বলে কি সময় কাটাই কেটে ঘোড়ার ঘাস?
লোকে যে কয় বিদ্যে আমার ‘কথামালাই শেষ
এর মধ্যে সত্যি কথা নেইকো বিন্দুলেশ।
ওদের পাড়ার লাইব্রেরিতে কেতাব আছে যত?
কেউ পড়েছে তন্নতন্ন করে আমার মতো?
আমি অর্থাৎ শ্রীগোবিন্দ এমনি পড়ার যম
পড়াশুনো নয়কো আমার কারুর চেয়ে কম।
কতকটা এই দেখেশিখে কতক পড়েশুনে
(আর) কতক হয়তো স্বাভাবিকী প্রতিভারই গুণে
উন্নতিটা করছি যেমন আশ্চর্য তা ভারি
নিজের মুখে সব কথা তার বলতে কি আর পারি?
বলে গেছেন চণ্ডীপতি কিংবা অন্য কেউ
“আকাশ জুড়ে মেঘের বাসা সাগরভরা ঢেউ
জীবনটাও তেমনি ঠাসা কেবল বিনা কাজে
যেদিক দিয়ে খরচ করি সেই খরচই বাজে।”
আমি অর্থাৎ শ্রীগোবিন্দ চলতে ফিরতে শুতে
জীবনটাকে হাঁকাই নেকো মনের রথে জুতে।
হাইড্রোজেনের দুই বাবাজি অক্সিজেনের এক
নৃত্য করেন গলাগলি কাণ্ডখানা দেখ্
আহ্লাদেতে এক্সা হয়ে গলে হলেন জল
এই সুযোগে সুবোধ শিশু “শ্রীগোবিন্দ” বল্।
[অসমাপ্ত]
।। সমাপ্তি।।