।। সূদন ওঝা।।

সূদন ছিল ভারি গরিব, তার এক মুঠা অন্নেরও সংস্থান নাই। রোজ জুয়া খেলে লোককে ঠকিয়ে যা পায়, তাই দিয়ে কোনরকমে তার চলে যায়। যেদিন যা উপায় করে, সেইদিনই তা খরচ করে ফেলে, একটি পয়সাও হাতে রাখে না। এইরকমে কয়েক বছর কেটে গেল; ক্রমে সূদনের জ্বালায় গ্রামের লোক অস্থির হয়ে পড়ল, পথে তাকে দেখলেই সকলে ছুটে গিয়ে ঘরে দরজা দেয়; সে এমন পাকা খেলোয়াড় যে কেউ তার সঙ্গে বাজি রেখে খেলতে চায় না।
🕸️একদিন সূদন সকাল থেকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু গ্রামময় ঘুরেও কাউকে দেখতে পেল না। ঘুরে ঘুরে নিরাশ হয়ে সূদন ভাবল—‘শিবমন্দিরের পুরুতঠাকুর তো মন্দিরেই থাকে—যাই, তার সঙ্গেই আজ খেলব।’ এই ভেবে সূদন সেই মন্দিরে চলল। দূর থেকে সূদনকে দেখেই পুরুতঠাকুর ব্যাপার বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি মন্দিরের মধ্যে অন্ধকারে লুকিয়ে পড়ল।
🕸️মন্দিরের পুরুতকে না দেখতে পেয়ে সূদন একটু দমে গেল বটে, কিন্তু তখনই স্থির করল—‘যাঃ—তবে আজ মহাদেবের সঙ্গেই খেলব।’ তখন মূর্তির সামনে গিয়ে বলল—“ঠাকুর! সারাদিন ঘুরে ঘুরে এমন একজনকেও পেলাম না, যার সঙ্গে খেলি। রোজগারের আর কোন উপায়ও আমি জানি না, তাই এখন তোমার সঙ্গে খেলব। আমি যদি হারি, তোমার মন্দিরের জন্য খুব ভালো একটি দাসী এনে দিব; আর তুমি যদি হার, তবে তুমি আমাকে একটি সুন্দরী মেয়ে দিবে—আমি তাকে বিয়ে করব।” এই বলে সূদন মন্দিরের মধ্যেই ঘুঁটি পেতে খেলতে বসে গেল। খেলার দান ন্যায়মত দুই পক্ষেই সূদন দিচ্ছে—একবার নিজের হয়ে, একবার দেবতার হয়ে খেলছে। অনেকক্ষণ…