।। লোলির পাহারা।।

শহর থেকে অনেক দূরে ‘লোলি’দের বাড়ি। সে বাড়িতে খালি লোলি থাকে, আর তার বাবা থাকেন, আর থাকে একটা বড়ো শুওর। বাড়ির চারদিকে ছোট ছোট খেত, তার চারদিকে বেড়া দিয়ে ঘেরা। খেতে যে সামান্য ফসল হয়, তাই বেচবার জন্য লোলির বাবা শহরে যান, আর লোলিকে বলে যান, “তুই বাড়িতে থেকে ভালো করে পাহারা দিস্।” লোলি বাড়িতেই থাকে, কিন্তু পাহারা দেয় বিছানায় শুয়ে চোখ বুজে, নাক ডাকিয়ে!
🕸️একদিন লোলির বাবা শহরে যাবার সময়ে লোলিকে বললেন, “ওরে! আমার তো আজকেও ফিরতে সন্ধে হবে, একটু ভালো করে মন দিয়ে পাহারা দিস্। কশাইবুড়ো বলেছিল শুওরটাকে কিনবে—তা হলেই শীতকালটা আমাদের কোনরকমে চলে যাবে। দেখ বাপু, ফটকটি খোলা রেখো না যেন! শুওরটা যদি পালায়, তা হলে কিন্তু উপোস করে মরতে হবে।” লোলি খুব খানিক ঘাড় নেড়ে গম্ভীর হয়ে বলল, “হ্যাঁ, আমি খুব করে পাহারা দেব—আর কখনো ফটক খুলে রাখব না।”
🕸️লোলির বাবা চললেন শহরের দিকে, আর লোলি একটা খড়ের গাদার উপর বসে পাহারা দিতে লাগল। বড়ো শুওরটা শুয়ে শুয়ে ঘঁৎ ঘঁৎ করে নাক ডাকছে, তাই শুনতে শুনতে লোলিও কখন যে চোখ বুজে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, তা সে নিজেও টের পায় নি। হঠাৎ সে কেমন যেন চম্কে উঠল, বাবার কথাগুলো তার মনে পড়ল। সর্বনাশ! শুওর যদি পালায়, তবে এবার দুজনকেই উপোস থাকতে হবে। সে কান পেতে শুনল, শুওরের ঘঁৎ ঘঁৎ শব্দ শোনা যাচ্ছে না! সে রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখল—ফটকের দরজা খোলা! ভয়ে অমন শীতের মধ্যেও লোলির গা বেয়ে দরদর করে ঘাম ছুটতে লাগল।…