।। ভাঙা তারা।।

মাতারিকি আকাশের পরী। আকাশের পরী যারা, তাদের একটি করে তারা থাকে। মাতারিকি তার তারাটিকে রোজ সকালে শিশির দিয়ে ধুয়ে মেজে এমনি চকচক করে সাজিয়ে রাখত যে, রাত্রিবেলা সবার আগে তার ওপরেই লোকের চোখ পড়ত—আর সবাই বলত—“কি সুন্দর!” তাই শুনে শুনে আর-সব আকাশ-পরীদের ভারি হিংসা হত।
🕸️তানে হচ্ছেন গাছের দেবতা। তিনি গাছে গাছে রস জোগাতেন, ডালে ডালে ফুল ফোটাতেন আর গাছের সবুজ তাজা পাতার দিকে অবাক হ’য়ে ভাবতেন—‘এ জিনিস দেখলে পরে আর কিছুর পানে লোকে ফিরেও চাইবে না।’ কিন্তু লোকেরা গাছের উপর বার বার কেবল মাতারিকির তারা দেখত, আর কেবল তার কথাই বলত। তানের বড় রাগ হ’ল। সে বলল, “আচ্ছা, তারার আলো আর কত দিন? দুদিন বাদেই ঝাপসা হয়ে আসবে।” কিন্তু যত দিন যায় তারা ততই উজ্জ্বল আর ততই সুন্দর হয়, আর সবাই তার দিকে ততই বেশি করে তাকায়। একদিন অন্ধকার রাত্রে যখন সবাই ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখছে, তখন তানে চুপি-চুপি দুজন আকাশ-পরীর কানে কানে বলল, “এস ভাই, আমরা সবাই মিলে মাতারিকিকে মেরে তারাটাকে পেড়ে আনি।” পরীরা বলল, “চুপ, চুপ, মাতারিকি জেগে আছেন। পূর্ণিমার জোছনা রাতে আলোয় শুয়ে মাতারিকির চোখ যখন আপনা হতে ঢুলে আসবে, সেই সময়ে আবার এস।”
🕸️এ-সব কথা কেউ শুনল না, শুনল খালি জলের রাজার ছোট্ট একটি মেয়ে। রাজার মেয়ে রাত্রি হলেই, সেই তারাটির ছায়া নিয়ে খেলতে খেলতে জলের নীচে ঘুমিয়ে পড়ত আর মাতারিকির স্বপ্ন দেখত। দুষ্ট পরীর কথা শুনে তার দুচোখ ভরে জল আসল।…