।। দেবতার দুর্বুদ্ধি।।

স্বর্গের দেবতারা যেখানে থাকেন, সেখান থেকে পৃথিবীতে নেমে আসবার একটিমাত্র পথ; সেই পথ রামধনুকের তৈরী। জলের রঙে আগুন আর বাতাসের রঙ মিশিয়ে দেবতারা সেই পথ বানিয়েছেন। আশ্চর্য সুন্দর সেই পথ। স্বর্গের দরজা থেকে নামতে নামতে পৃথিবী ফুঁড়ে কোন অন্ধকার ঝরনার নীচে মিলিয়ে গেছে। কোথাও তার শেষ নেই।
🕸️পথটি পেয়ে দেবতাদের আনন্দও হল, ভয়ও হল। ভয় হল এই ভেবে যে, ঐ পথ বেয়ে দুর্দান্ত দানবগুলো যদি স্বর্গে এসে পড়ে? দেবতারা সব ভাবনায় বসেছেন, এমন সময় চারদিক ঝলমলিয়ে, আলোর মত পোশাক পরে, হিমদল এসে হাজির হলেন। হিমদল কে? হিমদল হলেন আদি দেবতা অদিনের ছেলে। তাঁর মায়েরা নয়টি বোন, সাগরের মেয়ে। তাঁদের কাছে পৃথিবীর বল, সমুদ্রের মধু আর সূর্যের তেজ খেয়ে তিনি মানুষ হয়েছেন। তাঁকে দেখেই দেবতারা সব ব’লে উঠলেন, “এসো হিমদল, এসো মহাবীর, আমাদের রামধনুকের প্রহরী হয়ে স্বর্গদ্বারের রক্ষক হও।”
🕸️সেই অবধিই হিমদলের আর অন্য কাজ নেই, তিনি যুগ-যুগান্তর রাত্রিদিন স্বর্গদ্বারে প্রহর জাগেন। ঘুম নেই, বিশ্রাম নেই, একটিবার পলক ফেললেই বহুদিনের সমস্ত শ্রান্তি জুড়িয়ে যায়। রামধনুকের ছায়ার নীচে সারারাত শিশির ঝরে, তার একটি কণাও হিমদলের চোখ এড়ায় না। পাহাড়ের গায়ে গায়ে সবুজ কচি ঘাস গজায় হিমদল কান পেতে তার আওয়াজ শোনেন। ফাঁকি দিয়ে স্বর্গে ঢুকবে এমন কারো সাধ্যি নেই। হাতে তাঁর এক শিঙের বাঁশি, সেই বাঁশিতে ফুঁ দিলে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল জুড়ে হুঙ্কার বাজবে…