।। শ্বেতপুরী আর লালপুরী।।

শ্বেতপুরীর রাজা আর লালপুরীর রাজা, দুজনের যেমন পাশাপাশি বাড়ি, তেমনি গলাগলি ভাব। শ্বেতপুরী বলে, “আমার ছেলে যখন বড় হবে, তখন তোমার মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে দেব।” লালপুরী বলে, “আমার মেয়ের যখন বয়স হবে, তখন তোমার ছেলেকে আমার জামাই করব।” আর দুজনেই বলে, “আহা, রানীরা যদি বেঁচে থাকতেন!”
🕸️এমনি করে দিন কেটে যায়। হঠাৎ একদিন কোত্থেকে এক শিকারি এসে রাজপুরীতে অতিথি হল। সে বলে এমন দেশ নেই যা সে দেখে নি। সেই সোনার দেশের কাজলি নদী, তার ওপারে রক্তমুখো অসভ্যেরা থাকে, সেখানে সে হরিণ মারতে গিয়েছে; নীল সাগরের মধ্যিখানে ছায়ায় ঢাকা রত্নদ্বীপ, সেখানে সে মুক্তো আনতে গেছে; ঐ যে পুরীর সামনে পৃথিবীজোড়া গভীর বন, সেই বনের ওপারে গিয়ে সে অদ্ভুত দৃশ্য দেখে এসেছে। সকলে বলল, “অদ্ভুত দৃশ্যটা কিরকম?” শিকারি বলল, “দেখতে পেলাম ঝরনাতলায় বনের বুড়ি, মাথায় তার সোনার চুল। সেই চুল দিয়ে বুড়ি রূপোর তাঁতে কাপড় বুনছে! চকচকে, ঝকঝকে, ফিনফিনে, ফুরফুরে চমৎকার কাপড়—তেমন কাপড় এ রাজ্যে নেই, ও রাজ্যে নেই, কোথাও নেই।”
🕸️সে রাত্রে রাজাদের চোখে আর ঘুম এলো না। তারা শুয়ে শুয়ে কেবলই ভাবছে, ‘আহা! সে কাপড় যদি কিছু আনতে পারতাম।’ শেষটায় শ্বেতপুরীর আর সহ্য হল না—উঠে লালপুরীর ঘরে গিয়ে বলল, “লালপুরী ভাই, জেগে আছ?” লালপুরী বলল, “হ্যাঁ ভাই, সেই কাপড়ের কথা ভেবে ভেবে আমার আর ঘুম আসছে না।” শ্বেতপুরী বলল, “আমারও সেই দশা। চল না, দুজনে চুপচাপ বেরিয়ে পড়ি।” লালপুরী বলল, “বেশ কথা। দেখা যাক, সেই বুড়ির সন্ধান পাওয়া যায় কি না।” শ্বেতপুরী চুপচাপ গিয়ে…