।। গোরুর বুদ্ধি।।

পণ্ডিতমশাই ভট্চাজ্জি বামুন, সাদাসিধে, শান্তশিষ্ট, নিরীহ মানুষ। বাড়িতে তাঁর সরষের তেলের দরকার পড়েছে, তাই তিনি কলুর বাড়ি গেছেন তেল কিনতে।
🕸️কলুর ঘরে মস্ত ঘানি, একটা গোরু গম্ভীর হয়ে সেই ঘানি ঠেলছে, তার গলায় ঘণ্টা বাঁধা। গোরুটা চলছে চলছে আর ঘানিটা ঘুরছে, আর সরষে পিষে তা থেকে তেল বেরোচ্ছে। আর গলার ঘণ্টাটা টুংটাং টুংটাং করে বাজছে।
🕸️পন্ডিতমশাই রোজই আসেন, রোজই দেখেন, কিন্তু আজ তাঁর হঠাৎ ভারি আশ্চর্য বোধ হল। তিনি চোখমুখ গোল করে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। তাই তো! এটা তো ভারি চমৎকার ব্যাপার।
🕸️কলুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ওহে কলুর পো, ও জিনিসটা কি হে?” কলু বলল, “আজ্ঞে ওটা ঘানিগাছ, ওতে তেল হয়।” পন্ডিমশাই ভাবলেন—এটা কি রকম হল? আমগাছে আম হয়, জামগাছে জাম হয়, আর ঘানিগাছের বেলায় তেল হয় মানে কি? কলুকে আবার জিগ্গেস করলেন, “ঘানি ফল হয় না?” কলু বলল, “সে আবার কি?”
🕸️পন্ডিতমশাই টিকিতে হাত বুলিয়ে ভাবতে লাগলেন তাঁর প্রশ্নটা বোধহয় ঠিক হয় নি। কিন্তু কোথায় যে ভুল হয়েছে, সেটা তিনি ভেবে উঠতে পারলেন না। তাই খানিকক্ষণ চুপ করে তারপর বললেন, “তেল কি করে হয়?” কলু বলল, “ঐখেনে সর্ষে দেয় আর গোরুতে ঘানি ঠেলে—আর ঘানির চাপে তেল বেরোয়।” এইবারে পন্ডিতমশাই খুব খুশি হয়ে ঘাড় নেড়ে, টিকি দুলিয়ে বললেন, “ও বুঝেছি! তৈল-নিষ্পেষণ যন্ত্র!”…