।। উকিলের বুদ্ধি।।

গরিব চাষা, তার নামে মহাজন নালিশ করেছে। বেচারা কবে তার কাছে পঁচিশ টাকা নিয়েছিল, সুদে আসলে তাই এখন পাঁচশো টাকায় দাঁড়িয়েছে। চাষা অনেক কষ্টে একশো টাকা জোগাড় করেছে; কিন্তু মহাজন বলছে, “পাঁচশো টাকার এক পয়সাও কম নয়; দিতে না পার তো জেলে যাও।” সুতরাং চাষার আর রক্ষা নেই।
🕸️এমন সময় শাম্লা-মাথায়, চশমা-চোখে তুখোড়-বুদ্ধি উকিল এসে বলল, “ঐ একশো টাকা আমায় দিলে, তোমার বাঁচবার উপায় করতে পারি।” চাষা তার হাতে ধরলো, পায়ে ধরলো, বলল, “আমায় বাঁচিয়ে দিন।” উকিল বলল, “তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন বাপু কথাটথা কয়ো না। যে যা খুশি বলুক, গাল দিক আর প্রশ্ন করুক, তুমি তার জবাবটি দেবে না—খালি পাঁঠার মতো ‘ব্যা—’ করবে। তা যদি করতে পার, তা হলে আমি তোমায় খালাস করিয়ে দেব।” চাষা বলল, “আপনি কর্তা যা বলেন, তাতেই আমি রাজি।”
🕸️আদালতে মহাজনের মস্ত উকিল, চাষাকে এক ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি সাতবছর আগে পঁচিশটাকা কর্জ নিয়েছিলে?” চাষা তার মুখের দিকে চেয়ে বলল, “ব্যা—”। উকিল বলল, “খবরদার!—বল, নিয়েছিলে কি না।” চাষা বলল, “ব্যা—” উকিল বলল, “হুজুর! আসামীর বেয়াদবি দেখুন।” হাকিম রেগে বললেন, “ফের যদি অম্নি করিস, তোকে আমি ফাটক দেব।” চাষা অত্যন্ত ভয় পেয়ে, কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, “ব্যা-ব্যা—” হাকিম বললেন, “লোকটা পাগল নাকি?”
🕸️তখন চাষার উকিল উঠে বলল, “হুজুর, ওকি আজকের পাগল—ও বহুকালের পাগল, জন্মে অবধি পাগল। ওর কি কোন বুদ্ধি আছে, না কান্ডজ্ঞান আছে? ও আবার…