।। কুকুরের মালিক।।

ভজহরি আর রামচরণের মধ্যে ভারি ভাব। অন্তত, দুই সপ্তাহ আগেও তাহাদের মধ্যে খুবই বন্ধুতা দেখা যাইত।
🕸️সেদিন বাঁশপুকুরের মেলায় গিয়া তাহারা দুইজনে মিলিয়া একটা কুকুরছানা কিনিয়াছে। চমৎকার বিলাতি কুকুর—তাহার আড়াই টাকা দাম। ভজুর পাঁচসিকা আর রামার পাঁচসিকা—দুইজনের পয়সা মিলাইয়া কুকুর কেনা হইল। সুতরাং দুইজনেই কুকুরের মালিক।
🕸️কুকুরটাকে বাড়িতে আনিয়াই ভজু বলিল, ”অর্ধেকটা কুকুর আমার, অর্ধেকটা তোর।” রামা বলিল, “বেশ কথা! মাথার দিকটা আমার, ল্যাজের দিকটা তোর।” ভজু একটু ভাবিয়া দেখিল, মন্দ কি! মাথার দিকটা যাহার সেই তো কুকুরকে খাওয়াইবে, যত হাঙ্গাম সব তাহার। তাহা ছাড়া কুকুর যদি কাহাকেও কামড়ায়, তবে মাথার দিকের মালিকই দায়ী, ল্যাজের মালিকের কোন দোষ দেওয়া চলিবে না। সুতরাং সে বলিল, “আচ্ছা, ল্যাজের দিকটাই নিলাম।”
🕸️দুইজনে দুপুরবেলায় বসিয়া কুকুরটার পিঠে হাত বুলাইয়া তোয়াজ করিত। রামা বলিত, “দেখিস, আমার দিকে হাত বোলাস নে।” ভজু বলিত, “খবরদার, এদিকে হাত আনিস নে।” দুইজনে খুব সাবধানে নিজের নিজের ভাগ বাঁচাইয়া চলিত। যখন ভজুর দিকের পা তুলিয়া কুকুরটা রামার দিকে কান চুলকাইত, তখন ভজু খুব উৎসাহ করিয়া বলিত “খুব দে—আচ্ছা করে খামচে দে।” আবার ভজুর দিকে মাছি বসিলে রামার দিকের মুখটা যখন সেখানে কামড়াইতে যাইত, তখন রামা আহ্লাদে আটখানা হইয়া বলিত, “দে কামড়ে! একেবারে দাঁত বসিয়ে দে।”…