।। হিংসুটি।।

এক ছিল দুষ্টু মেয়ে—বেজায় হিংসুটে, আর বেজায় ঝগড়াটে। তার নাম বলতে গেলেই তো মুশকিল, কারণ ঐ নামে সন্দেশের শান্ত লক্ষ্মী পাঠিকা যদি কেউ থাকেন, তাঁরা তো আমার উপর চটে যাবেন।
🕸️হিংসটির দিদি বড় লক্ষ্মী মেয়ে—যেমন কাজে কর্মে তেমনি লেখা পড়ায়। হিংসুটির বয়স সাত বছর হয়ে গেল, এখনো তার প্রথম ভাগই শেষ হল না—আর তার দিদি তার চাইতে মোটে এক বছরের বড়—সে এখনই ‘বোধোদয়’ আর ‘ছেলেদের রামায়ণ’ প’ড়ে ফেলেছে। ইংরিজি ফার্স্টবুক তার কবে শেষ হয়ে গেছে। হিংসুটি কিনা সবাইকে হিংসে করে, সে তার দিদিকেও হিংসে করতো। দিদি স্কুলে যায়, প্রাইজ পায়—হিংসুটি খালি বকুনি খায় আর শাস্তি পায়।
🕸️দিদি সেবার ছবির বই প্রাইজ পেলে, আর হিংসুটি কিচ্ছু পেলে না, তখন যদি তার অভিমান দেখতে! সে সারাটি দিন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে গাল ফুলিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বসে রইল—কারো সঙ্গে কথাই বলল না। তারপর রাত্রি বেলায় দিদির অমন সুন্দর বইখানাকে কালি ঢেলে মলাট ছিঁড়ে কাদায় ফেলে নষ্ট করে দিল। এমন দুষ্টু হিংসুটে মেয়ে!
🕸️হিংসুটির মামা এসেছেন, তিনি মিঠাই এনে দু বোনকেই আদর করে খেতে দিয়েছেন। হিংসুটি খানিকক্ষণ তার দিদির খাবারের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলল। মামা ব্যস্ত হয়ে বললেন, “কিরে, কি হল? জিভে কামড় লাগল নাকি?” হিংসুটির মুখে আর কথা নেই, সে কেবলই কাঁদছে। তখন তার মা এক ধমক দিয়ে বললেন, “কি হয়েছে বল না!” তখন হিংসুটি কাঁদতে কাঁদতে বলল, “দিদির ঐ রসমুন্ডিটা আমারটার চাইতেও বড়।” তাই শুনে দিদি তাড়াতাড়ি নিজের রসমুন্ডিটা তাকে দিয়ে দিল।…