।। পুতুলের ভোজ।।

পুতুলের মা খুকি আজ ভয়ানক ব্যস্ত। আজ কিনা ছোট্ট পুতুলের জন্মদিন, তাই খুব খাওয়ার ধুম লেগেছে। ছোট্ট টেবিলের ওপর ছোট্ট-ছোট্ট থালাবাটি সাজিয়ে, তার মধ্যে কি চমৎকার করে খাবার তৈরি করে রাখা হয়েছে। আর চারদিকে সত্যিকারের ছোট্ট-ছোট্ট চেয়ার সাজানো রয়েছে, পুতুলেরা বসে খাবে বলে।
🕸️খুকির যে ছোটদাদা, তার কিনা সাড়ে চার বছর বয়স, তাই সে বলে, “পুতুলরা খেতেই পারে না, তাদের আবার জন্মদিন কি?” কিন্তু খুকি সে কথা মানবে কেন? সে বলে, “পুতুলরা সব পারে। কে বলল পারে না? কে বলল যে কক্ষনো কোনদিন তারা কথা বলে না, কক্ষনো কোনদিন খায় না?”—খোকাপুতুলের যখন অসুখ করেছিল তখন সে কি ‘মা, মা’ বলে কাঁদতো না? নিশ্চয়ই কাঁদতো। তা না হলে খুকি জানলো কি করে যে তার অসুখ করেছে? খুকির দাদা এ-সবের জবাব দিতে পারে না, তাই সে ‘বোকা মেয়ে, হাঁদা মেয়ে’ বলে মুখ ভেংচিয়ে চলে যায়।
🕸️খুকি গেল তার মার কাছে নালিশ করতে। মা সব শুনেটুনে বললেন, “সব সময়ে সকলের কাছে কি পুতুলরা জ্যান্ত হয়? যেদিন দেখবি পুতুল সত্যি করে খাবার খাচ্ছে, সেদিন ছোড়দাকে ডেকে দেখাস।” খুকি বলল, “আজকে যদি ওরা জেগে উঠে খাবার খেতে থাকে, তা হলে কি মজাই হবে! আমার বোধ হয় রাত্তিরে যখন আমরা ঘুমিয়ে থাকি, তখন তাদের দিন হয়! তা না হলে আমরা তো দেখতে পেতাম? সেই যে একদিন টিনের তৈরি দুষ্টু পুতুলটা খাট থেকে পড়ে গিয়েছিল—নিশ্চয় ওরা রাত্রে উঠে মারামারি করেছিল। তা না হলে খাট থেকে পড়লো কেন? আজ থেকে আমি ঘুমোবার সময় খুব ভালো করে কান পেতে থাকব।”…